অভিযোগহীন একজন | বাদশাহ্ সৈকত

অভিযোগহীন একজন | বাদশাহ্ সৈকত
মনের সকল অভিযোগ দুরে ঠেলে একজন নিখাঁদ অভিযোগহীন মানুষ হওয়ার চেষ্টায় নিজেকে সফল মানুষ মনে করে লাক্কু মিয়া। মনে মনে নিজেকে নিঃশর্ত অভিযোগহীন দাবী করে প্রশান্তির একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ছাড়ে মনের একান্তই গভীর থেকে।
নিজের এ পরিবর্তনের কথা চিন্তা করে এখন সব সময় খুব কম কথা বলার চেষ্টা করে সেটা যে কারো সাথেই হোক না কেন। তাছাড়া বেশি কথা বলার মতো অহংকার বা গৌরবের কোন ঘটনাই যেন তার জীবনে একটিও ঘটেনি। তবে ইদানিং মানুষের বলা কথা গুলো শুনতেও ভালোলাগে না তার। সব যেন অন্তঃসারশূন্য। জ্ঞানহীন মানুষদের জড় পদার্থের মতো মনে হয়।
এজন্য পরিচিতজনদের সাথে মেলা-মেশাও কমিয়ে দিয়েছে। ধুঁকে ধুঁকে সরকারী চাকুরীতে বয়সের সীমা-রেখা পেরুনোর পর শহরেও যাওয়া ছেড়ে দিয়েছে প্রায়। ভাললাগে না কোন কিছুই। প্রতিদিন একই রাস্তা, একই মানুষের মুখ, একই দোকানপাট, চায়ের দোকান, পান সিগারেটের দোকান।
পরিচিত দোকানের চা গুলোও কেমন জানি পানসে হয়ে গেছে। তার উপর চায়ের দোকান গুলোতে বেশি দিন বেঁচে থাকার আশায় ফ্যাশানের মতো চিনি ছাড়া চা খাওয়া লোকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় নিজের ভবিষ্যৎ রোগ-ব্যাধি ও মরণের চিন্তাটাও মাঝে মধ্যে মনের ভিতর ঘুরপাক খেতে থাকে।
লাক্কু মিয়া তখন ভাবে, ধুর মরণে তার আবার ভয় আছে নাকি? সেতো কবেই মরে গেছে। এখন আর মরলেই বা কি, বাঁচলেই বা কি? তাছাড়া চায়ের দোকানে বসলে রাজনৈতিক বোদ্ধাদের পেচাল গুলোও বিষাদিত লাগে তার কাছে। নিজের জীবনের চেয়েও দলকে, নেতা-নেত্রীকে বেশি ভালোবাসার গল্প শুনলে পাছায় স্ব-জোড়ে লাথ্যি মারতে ইচ্ছে করে। রাজনীতির সংজ্ঞা না জানা এসব লোকরাই দেশটার বারোটা বাজিয়েছে।
এসব কিছু ভেবেই শহরে যাওয়া কমিয়ে দিয়েছে লাক্কু মিয়া। এখন বাসাতেই রুমের ভিতর দিন রাতের বেশির ভাগ সময় কাটে তার। সরকারী চাকুরীজীবি অহংকারী বউটাকে ভালো না লাগলেও তার মন মানষিকতার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পেরেছে এটাই আসল কথা।
বউটাকে ভালো লাগে না বললে ভুল হবে, বউয়ের আচরণ ভালো লাগে না। মেধাহীন মনে হয়। কিন্তু সে কথা বললে ঝামেলা বাড়তে পারে, এজন্য বলা হয় না। বিয়ের আগে রাতভর মোবাইলে সোনা-পাখি, ময়না-পাখি বলে ডাকা আদরের কথাগুলো এখন প্রতারনার মতো মনে হয়। বিয়ের আগে বউকে উদার আর মহতি মনে হলেও এখন ভুয়া মনে হয় সব কিছুই।
লাক্কু মিয়ার মনে হয় বিয়ের আগে যে মেয়েরা তার প্রেমিককে কথায় কথায় বাবা-মায়ের খোঁজ খবর নিতে বলতো সেই মেয়েরাই বিয়ের পর কালক্ষেপন না করে শশুর-শাশুরির মুখে লাথি মেরে আলাদা সংসার পাতে। ভালোবেসে বিয়ে করা বউ আকতারি পারভিনের এমন আচরণ সত্যিই অবাক করে দিয়েছে তাকে। প্রাইমারীতে চাকুরী করা সকল মেয়ে মানুষরাই মনে হয় তার বউয়ের মতো।
লাক্কু মিয়া ভাবে, কথায় কথায় ডিভোর্সের হুমকি দেয়া এসব মহিলারা নিশ্চিত একদিন জাহান্নামে যাবে। শুধু মাত্র তিন বছরের মেয়ে উর্মিতা না থাকলে কবেই কপালে গুড়ি মেরে চলে যেত এমন অশিক্ষায় শিক্ষিত বউয়ের সংসার থেকে।
একমাত্র মেয়েটার কারনেই, মেয়েটার বাবা ডাকের কারণেই সম্ভব হয় নাই। তবুও পুরুষ হয়ে ঘরের মেয়েলি কিছু কাজ করার সময় ভীষন রাগ হয় তার। মনে হয় সব ছেড়ে মেয়েকে নিয়ে অথবা রেখে দুরে কোথাও চলে যায় সে।
লাক্কু মিয়ার মনে পড়ে তার এই দজ্জাল প্রকৃতির বউ আকতারি পারভিনের জন্য মায়ের কত গালি খেতে হয়েছে তাকে। হারামজাদা, বউয়ের গোলাম। বউকে কিছু বলার সাহস নাই তোর। রাত হলে বউ গায়ে হাত দিতে দিবে না এই ভয়ে কিছু বলিস না। বের হয়ে যা আমার বাড়ি থেকে। কুলাংগার কোথাকার।
গর্ভধারিণী মায়ের মুখে এসব কথা শুনে মাঝে মধ্যে পৃথিবীতে বেঁচে থাকার সাধ মিটে গিয়েছিল তার। রাতে দিনে অহরহ চলতো এসব বাক্য বিনিময়। বউ কথার মাঝে কিছু একটা বলে চুপ করে থাকতো। তারপর চলতে থাকতো গালিসহ অভিশাপের পালা।
হাজার হোক মা জননী। দশ মাস দশ দিন গর্ভে রেখেছিল তাকে। চুপচাপ সহ্য করতে হতো সবকিছুই। তবুও মাঝে মধ্যে মুখ ফসকে মায়ের কথার উত্তরে যেই বেরিয়ে যেত’ মা আজকাল সরকারী চাকুরীজীবি বউকে ইচ্ছে হলেও কিছু বলা যায় না। আর কোথায় যায়।
মায়ের পায়ের রক্ত যেন মাথায় উঠে যায়। গলার জোড় দ্বিগুণ বাড়িয়ে বলতে থাকে বউয়ের পা চাটা গোলাম। এই মুহুর্তে তোর বউ ছোয়া নিয়া বাড়ি থেকে বের হয়া যা। তোর মতো বেহায়া বেটার দরকার নাই আমার। তুই রাস্তা-ঘাটে পড়ে মর। এমন বউ বেটার কপালোত গুড়ি মারং বলার সাথে সাথে মাটিতেও দুইটা গুড়ি মারে।
এসময় বাবা নিশ্চুপ শ্রোতার মতো শুনতে থাকে। লাক্কু মিয়া জানে তার বাবা নওয়াব আলী একজন মাটির মানুষ। বউ ছালেহা বেগমের কথায় উঠবস করেন তিনি। দেখে মনে হয় সংসারে নওয়াব আলীর কিছু নাই। সব তার মা বাপের বাড়ি থেকে এনে সংসার পেতেছে। তার দয়ায় এ সংসারে বেঁচে আছে সবাই।
বাবা কিছু বললেই দাবাড় মেরে বলে, ছেলে বউকে শিক্ষা করতে পারে না আর আমার উপর খবরদারী। বাবার ভাত পর্যন্ত বন্ধ করারও হুমকী দিত মা জননী।
কিন্তু ছেলে-বউয়ের প্রতি মায়ের এই রাগের রহস্যটা ঠিক মতো বুঝতে পারে না লাক্কু মিয়া। বউ তার সংসারের কোন কাজের ধার ধারে না এজন্য নাকি অন্য কোন কারন। নাকি বউ তার বাড়িতে থেকে বসে শুয়ে খেয়ে খেয়ে চাকুরী করে পুটলি গোছায় এজন্য।
এই সাধারণ ঘটনায় মায়ের এতো রাগের কারণ কি তা আজও অজানা তার কাছে। কিন্তু ছোট বেলা থেকেই তো দেখে আসছে এতো বেশি রাগের মহিলা ছিল না তার মা।
বউটাকে আনার পর কিছুদিন ভালোই ছিল। তারপর কেন যে এতো রাগ সব সময় খিচির-মিচির করতে থাকলো তা কে জানে।
এক পর্যায়ে বাপ-দাদার ভিটে মাটি ছেড়ে শহরের নিকটবর্তী ভাড়া বাসায় বউয়ের সাথে থাকতে বাধ্য হল লাক্কু মিয়া। বউ-মেয়ের সাথে থাকতে থাকতে মাঝে মধ্যে নিরীহ বাবা ও গর্ভধারীণী মায়ের জন্য মনটা খারাপ হয় তার। কিন্তু মায়ের পক্ষ নেয়া ছোট ভাইদের ন্যায় অন্যায় বলা কথা গুলো মনে পড়লে দুঃখ কিছুটা নিবারন হয়।
যে ছোট ভাইদের কোলে পিঠে মানুষ করেছিল সেই ভাইয়েরা যখন তাকে বালকামা, বেয়াদব, বউয়ের ভাড়ুয়া বলে গালি দিত। মায়ের কথায় মারতে আসতো পর্যন্ত। সেসব কথা ভাবলে এখনও চোখে পানি আসে তার।
লাক্কু মিয়া ভাবে, এমন মা ভাইয়ের সংসারে মর্যাদা নিয়ে থাকার চেয়ে গোপনে রুমের ভিতর ভালোবেসে বিয়ে করা বউটার ন্যায় অন্যায় কিল ঘুষিই অনেক ভালো। ভাবে সেতো আর রক্তের কেউ না। এজন্য বউয়ের কথায় এখন আর কোন দুঃখ বোধও হয় না তেমন।
অভিযোগহীন মানুষের মতো সোনার ডিম পাড়া বউয়ের কথায় কাপড় কাচা, তরকারী কোটাসহ রান্না-বান্নার কাজটাও নীরবে করে দেয়। ভাবে শুধু ভাগ্যের দোষে তার আজ এ অবস্থা।
নতুন সংসারে প্রথম প্রথম এসব করতে ভীষণ রাগ হতো লাক্কু মিয়ার। ভালোবেসে পাওয়া সাত রাজার ধন আকতারি পারভিনের সাথে রাগ করে কথাই বলতো না তিন দিন, সাত দিন এমনকি পনের দিন পর্যন্ত। বউ রাগ করে বাপের বাড়িতে গেলে মনের দুঃখে, ক্ষোভে খেয়ে না খেয়ে বিছানায় শুয়ে সময় কাটাতো। এসময় গুলোতে খুব রাগ হতো সৃষ্টি কর্তার উপর। কি প্রয়োজন পড়েছিল সৃষ্টি কর্তার তাকে দুনিয়ার মুখ দেখানোর।
আলাদা সংসারে থাকতে দুইবার রাগ করে ঢাকাও গিয়েছিল সে। একবারতো এক মাস পার হওয়ার পরও ফিরে আসেনি। পরে আবার জানি কেমন করে বউয়ের প্রতি ভালোবাসা জন্ম নিয়েছিল বুঝতেই পারেনি।
মেয়েটার প্রতিতো মন টানছিলই, পাশাপাশি দুই তিন দিন পার হতেই কেমনে জানি বউটার প্রতি ভালোবাসা জন্ম নিয়েছিল, মনের ভিতর শূন্যতা তৈরি হয়েছিল। পরে সরকারী চাকুরীজীবি বউয়ের সামান্য ভালোবাসাই তাকে সংসারে ফিরিয়ে এনেছে।
তবে লাক্কু মিয়া মাঝে মধ্যে ভাবে তার নিজেরই বুঝি লজ্জা শরম কিছু নাই। তাছাড়া কি এমনই বা আছে আকতারি পারভিনের মাঝে শুধু সংসার চালানোর জন্য প্রতিমাসে বেতনের টাকা কয়টি ছাড়া। আর বেতনের টাকা কয়টা ব্যাংক থেকে তোলার পর নিজের বাবা-মা, ভাই-বোনের প্রতি দরদ যেন উছলে পড়ে। যেন তারা মেয়ের সরকারী চাকুরীর বেতনের দিকে চেয়ে আছে।
আগে প্রায় সময় এমন একটি সরকারী চাকুরী জোটাতে না পাড়ার ব্যর্থতায় নিজের উপর ধিক্কার দিত লাক্কু মিয়া। তার সকল যোগ্যতা থাকার পরও কেন সরকারী চাকুরী জোটাতে পারেনি সেটাও ভালো করে জানা আছে তার।
সে জানে চাকুরী নেয়ার জন্য অন্য দশজনের চেয়ে অনেক বেশি যোগ্যতা আছে তার। সেকথা আকতারি পারভিনও জানে। শুধুই বালের রাজনীতি। এই রাজনীতিই জীবনটা ধ্বংস করে দিয়েছে। রাজনৈতিক নেতা আর আমলারাই তাকে ভালোভাবে বাঁচতে দিল না। বাবা-মা, ভাই-বোনের সংসার থেকে তাকে আলাদা করে দিয়েছে। এজন্য আজ অবধি রাজনীতির প্যাচাল সহ্যই করতে পারে না সে।
লাক্কু মিয়া ভাবে একজন ভালো ছাত্রের গৌরব নিয়ে বেড়ে ওঠা যৌবনে রাজনীতি সকল স্বপ্ন ভেঙ্গে দিতে পারে তা সে সময় বুঝতেই পারে নাই সে। যে গৌরবেই আকতারি পারভিনের মতো একজনকে বউ হিসেবে পেয়েছে। এখন বুঝছে সে গৌরবের লাভ কি ছিল? সে জানে প্রাইমারীর রিটার্ন পরীক্ষায় কয়েকবার টিকেও ভাইভায় আউট হয়েছে কিভাবে।
নারী কোটা, মুক্তিযোদ্ধা কোটা আর পোষ্য কোটার সুবাদে তার চেয়ে কম মেধার মেয়েরা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা, কিছু শিক্ষকের সন্তানও অনায়াসে সরকারী চাকুরীতে ঢুকে পড়েছে। আর সাধারণ কোটা হওয়ায় অনেক মেধা অর্জন করেও চাকুরী পায়নি সে।
এসব কথা মনে হলে আগে প্রায় সময় দেশের প্রধানদের বুদ্ধিজীবিদের মনে মনে গালি দিত লাক্কু মিয়া। দীর্ঘদিন ধরে মহিলারা দেশের প্রধান হওয়ায় মহিলাদের সুযোগ সুবিদা দিতে দিতে এই অবস্থা তার।
এখন নাকী শতকরা পচানব্বই ভাগ প্রাইমারী স্কুলে পুরুষ টিচার নাই। মহিলারাই সব শরীর চর্চা, খেলাধুলা থেকে শুরু করে সব কিছুই করে। আবার ৬ মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি। আর এতে করে প্রাইমারী শিক্ষিকাদের এমন ভাব বেড়ে গেছে যেন একেক জন শিক্ষিকা একেক জন মিনিস্টার, সচিব, উপ-সচিব, মহাসচিব হয়ে গেছে। পায়ের উপর পা তুলে, বিছানায় শুয়ে বসে স্বামীকে পিএস, এপিএস সর্বপরি স্কুলের পিয়নের মতো যখন তখন অর্ডার করে। নানা অজুহাতে শরীর খারাপের অজুহাত দেখিয়ে মিথ্যাচার করে নিজের বিবাহিত স্বামীর দ্বারা কাপড়-চোপড় পর্যন্ত পরিষ্কার করিয়ে নেয়।
সরকারী চাকুরীজীবি বউয়ের এসব চালাকী বুঝতে পেরেও কিছু বলার থাকে না লাক্কু মিয়ার। প্রথম প্রথম কষ্ট লাগলেও এখন আর কষ্ট পায় না। ভাবে নিজের মহামূল্যবান ইজ্জত বিক্রি করেই তো অভিযোগহীন মানুষ হতে পেরেছে সে। তবে এখন আর নিজের ভাগ্যের উপর দোষ চাপায় না। যেকোন ভাবেই হোক একটি মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট জোগাড় করতে না পারা জন্মদাতা বাপের উপরও অভিযোগ নেই তার।
এখন আর কারো প্রতিই কোন অভিযোগ নেই লাক্কু মিয়ার। সে ভাবে আসলে টাকাই মানুষের আত্মমর্যাদা খেয়ে ফেলে।
মাঝে মধ্যে মনকে শান্তনা দেয়ার ভাষাও অবশিষ্ট থাকে না। বুকের পাজর ছেদ করা বউয়ের বাকা কথাও এখন আর আহত করতে পারে না তাকে। বউটাকে জীবনের সবচেয়ে বড় শত্রু মনে হলেও কখনও সেই বউয়ের ভালোবাসায় সিক্ত হতে হয় নিজেকে।
মাঝে মধ্যে রাতে বেড়াতে তার নিজের ইচ্ছে না থাকলেও খুব আপন করে, খুব ঘনিষ্ট ভাবে তাকে জড়িয়ে ধরে আদর করে আকতারি পারভিন। এখনও সোনা পাখি, ময়না পাখি বলে দুর্বল করার কৌশলটা ভালই রপ্ত করেছে আকতারি। লাক্কু মিয়া তখন উপায়ান্তহীন মানুষের মতো বউয়ের কৌশল মেনে নিয়ে যৌবনের রসে সব ভুলে যায়।
তবে আগে নিজের ইচ্ছে মতো আকতারি পারভিনকে আদর সোহাগ করলেও এখন আর সাহস হয় না। কখন ফোস করে উঠবে কে জানে। তাছাড়া আস্তে আস্তে বউকে মনিব ভাবত ভাবতে সে ইচ্ছেটাও মাটিতে মিশে গেছে। লাক্কু মিয়া এতোদিনে একটি বিষয় উপলদ্ধি করেছে সেটা হলো মানুষের ভালো লাগা না লাগার সাথে সাথেই যৌবনের চাহিদাটাও উঠা নামা করে। আর এজন্যই হয়তো বা সেক্সের কামনা-বাসনা তেমন কাজ করে না তার মধ্যে।
তবে এখন নিজের বিবাহিত স্ত্রী, ভালোবাসার পাখিটাকে নষ্ট মেয়ে, মাগী বলে মন হয় তার। মনে হয় কারো না কারো সাথে দৈহিক সম্পর্ক আছে আকতারি পারভিনের। তা নাহলে রাত জেগে জেগে ফেসবুকে চেটিং করতে যাবে কেন? নাইট ড্রেসে ইমোতে ভিডিও কলে কথা বলবে কেন? জীবন্ত স্বামীকে রেখে অন্য কোন পুরুষের সাথে এভাবে কথা বলবে কেন?
এরই মধ্যে বউয়ের চরিত্র হননের মতো অনেকগুলো প্রমাণও পেয়েছে লাক্কু মিয়া। রাত জেগে চেটিংয়ের ধরন, হালকা পোষাকের ফাঁকে ভিডিওতে দেহ দেখানোর কৌশল, মুখের বিভিন্ন ভঙ্গিমাই সে প্রমাণের স্বাক্ষ্য বহন করে।
নিজের বউকে অন্য কেউ সোনা-ময়না পাখি বললে, ইমোতে কিস দিলে কেমন লাগে সেটা সে ছাড়া আর কেউ ভালো বুঝতে পারে না। তবুও সন্তানের দিকে তাকিয়ে নিজের বউয়ের সাথে এক বিছানায় রাত যাপন করে এই অভিযোগহীন মানুষটি। এই ভেবে যে একজন পতিতার সাথে রাত যাপন করলেও টাকার প্রয়োজন হয়। সেখানে আকতারি পারভিনের মতো একজন উচু মানের, বড় মনের শিক্ষিত মহিলার বিছানায় বিনা পয়সায় শোয়ার ভাগ্য তার হয়েছে। অভিযোগহীন একজন বেকার মানুষেরতো এটাই বড় সৌভাগ্যের ব্যাপার।

0 comments: